স্বামীকে শিক্ষা দিতেই স্ত্রীকে রাতভর গণধর্ষণ!

স্বামীকে শিক্ষা দিতেই স্ত্রীকে রাতভর গণধর্ষণ!

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ স্বামী আবুল কাশেম (ছদ্মনাম)। চুরি করাই এক সময় ছিল তার পেশা। এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে সবাই তাকে চোর কাশেম নামেই জানতো। কিন্তু হঠাৎ বদলে যান তিনি। বছর দুয়েক আগেও তার বয়স যখন ২৪/২৫ তখনই ছেড়ে দিয়েছেন এ পেশা।

এখন শ্রমিক হিসেবে চাকরি করেন একটি টেক্সটাইল মিলে। সেখানেই পরিচয় হয় রীনা বেগম (ছদ্মনাম) নামে অন্য এক শ্রমিকের সঙ্গে। দীর্ঘ দু’বছর ভালোবাসা শেষে দুই মাস আগে ঘর বাধেন তারা। কিন্তু কাশেমের এ বদলে যাওয়া পছন্দ হয়নি তার সাবেক সতীর্থদের। সবাই মিলে ফন্দি আটেন শিক্ষা দিতে হবে কাশেমকে।

আর উচিৎ শিক্ষা দিতে গিয়েই কাশেমের স্ত্রী রীনা বেগমকে (২২) পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করে স্বামীর সাবেক বন্ধুরা। অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে ৭ পিশাচ রাতভর ব্রক্ষপুত্রের চরে ধর্ষণ করে তাকে। এমন নির্মমতা আর বর্বরতা সইতে না পেরে এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। ভোরে বাড়ির পাশের খোলা মাঠ থেকে ওই অবস্থাতেই তাকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা। বর্তমানে ওই নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর এলাকায় এমন পাশবিকতা চালানো হয় ওই গৃহবধূর ওপর।

পরে শনিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে আবুল বাদশা (৩২) ও রতন মিয়া (৩১) নামের দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।

নির্যাতিতা গৃহবধূ জানান, আমার ওপর যারা নির্যাতন করেছে, আমার ইজ্জত যারা কেড়ে নিয়েছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত গোলাম মাওলা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে নির্যাতিতার স্বামীকে উচিত শিক্ষা দিতে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ধর্ষণের কাজে ৭ জন অংশ নেন। বাকীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবার বাড়ি জামালপুর থেকে বেরিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে স্বামীর বাড়িতে ফেরেন নববধূ। কিন্তু গভীর রাতে উচালিখার মরিচারচর নামাপাড়া গ্রামের আল আমিন, রতন মিয়া, আবুল বাশার ওরফে বাদশাসহ অন্তত ৭ ব্যক্তি শুক্রবার রাতে ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে তুলে নিয়ে যায় নববধূকে। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে ব্রহ্মপুত্র নদের বালু চরে নিয়ে পালাক্রমে করা ধর্ষণ।

নির্যাতিতার স্বামী রতন জানান, রাত ১টার দিকে হঠাৎ তাদের দরজায় এসে ডাকাডাকি করে প্রতিবেশী আল আমিন, রতন, বাদশাসহ কয়েকজন। দরজা খুলতেই তিনজন তাকে ধরে বাড়ির কাছে একটি স্থানে নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। অন্যরা তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। নির্যাতিতা নববধূ জানিয়েছেন, চার ব্যক্তি তার মুখ বেঁধে বাড়ি থেকে পাশের ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচরে নিয়ে যায়। সেখানেই তার ওপর পৈশাচিকতা চালানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *