ঈশ্বরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পানিতে ফেলে নির্যাতন

ঈশ্বরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পানিতে ফেলে নির্যাতন

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঈশ্বরগঞ্জে যৌতুক লুভি স্বামী তার স্ত্রীকে হাত-পা বেধে পুকুরের পানিতে ফেলে নির্যাতন করার অভিযোগে স্বামীকে পুলিশ আটক করেছে। এঘটনায় নির্যাতিতা নারী নিজেই বাদি হয়ে রোববার ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আটককৃত স্বামী রাজন মিয়া ওরফে রফিককে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

জানা যায় উপজেলার চরশিহারী গ্রামের দরিদ্র কৃষক সাইফুল মিয়ার কন্যা শিউলি আক্তারের (১৯) কে ৭মাস পূর্বে বিয়ে দেয় নেত্রকোনা সদর উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের মৃত লাল চাঁন মিয়ার পুত্র রাজনের সাথে। বিয়ের সময় দরিদ্র পিতা নগদ ৫০হাজার টাকা সহ ১লাখ টাকার মালামাল দেন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুকের জন্য শিউলিকে প্রায় সময়েই মারধর করে হত্যার হুমকী দেয় স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন।

গত ১৩ মে সকাল দশটার দিকে শিউলি স্বামীর বাড়িতে থাকাবস্থায় তাকে হাত পা বেধে পাশের পুকুরে ফেলে দেয় এবং বিষয়টি মোবাইলে ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠায়। পুকুরে পানি কম থাকায় শিউলি বেঁচে যায় এবং পিতার কাছ থেকে টাকা এনে দেয়ার কথা বলে স্বামীকে ঈশ্বরগঞ্জের চরশিহারী গ্রামে নিয়ে আসেন।

পিতার বাড়িতে আসার পর টাকার জন্য ফের শিউলিকে মারধর করলে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বামী রাজনকে আটক করে।

শিউলির বাবা জানায়, মেয়েকে বিয়ের পূর্বে রাজন আরো একটি বিয়ে করেছিলো যা গোপন করা হয়। পূর্বের স্ত্রীকেও একই কায়দায় টাকা পয়সা নিয়ে নির্যতন করে ছেড়ে দেয়।

নির্যাতিতা শিউলি জানায়, ঘটনার দিন ভোরে তার স্বামী বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য ফোন করতে বলে। এতে শিউলী তার স্বামীকে জানায় বাবা কোথা থেকে টাকা দেবে। টাকার দেওয়ার মতো বাবার কোন সামর্থ নেই। এর পরই তার স্বামী তাকে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে স্বামী শিউলীর শরীরেরে মারধরের ক্ষতস্থা মরিচের ঘুড়া চিটিয়ে দেয় এবং পানির সাথে মরিচের ঘুড়া ঘোলে শিউলীকে পান করাতে বাধ্য করে। এতে সে যন্তনায় অস্থির হয়ে পড়লে তার হাত-পা ভেদে পুকুরে ফেলে নির্যাতন করে।

শিউলী তার পাশন্ড স্বামীর নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে বলেন, আমি এমন বিচার চাই যেন, আমার মতো আর কোন নারী এমন নির্যাতনের স্বাীকার না হন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলার আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *