চুরি

ঈশ্বরগঞ্জে খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে চুরি

খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দুই রাতে তিন বাড়িতে হানা দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে লুট করে নিয়ে গেছে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। ভুক্তভোগীরা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি।

জানা যায়, উপজেলা রাজিবপুর ইউনিয়নের বেলখেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল খায়ের। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মধুপুর শাখার শাখা সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সোমবার রাতে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার পর আর চেতনা ফেরেনি। সকালে প্রতিবেশীরা তাদের ঘরে গিয়ে অচেতন অবস্থায় পান।

পরে স্থানীয়ভাবে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়। খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে পরিবারটির নগদ অন্তত ৪০ হাজার টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কর নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

একই রাতে প্রতিবেশী প্রয়াত আলিম উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতেও এরকম ঘটনা ঘটে। ঘরের দরজা ভাঙার সময় কয়েকজন টের পেয়ে যাওয়ায় অবশ্য চক্রটি পালিয়ে যায়। তবে যাওয়ার পূর্বে জুতাসহ বিভিন্ন আলামত রেখে যায়। রাতের বেলায় চুরিতে সফল না হতে পারলেও সোমবার সকালের খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন আলিম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে গোলাম মহিউদ্দিন, তার স্ত্রী সখিনা খাতুন, নাতি নূর উদ্দিন আহমেদ, পুত্রবধূ এনি আক্তার ও আরেক ছেলে আনসার উদ্দিন মানিক।

সোমবার সকালে পরিবারটি অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে সোমবার রাতেই পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে চলে যান।

এর আগে গত রোববার রাতে পাশের রাজারামপুর গ্রামে এক সেনা সদস্যের বাড়িতেও একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর স্টোর অফিসার হিসেবে কর্মরত নূর হাসান সিদ্দিকী লাভলু বাড়িতে বেড়াতে এলে রোববার বাড়িতে পিঠার আয়োজন করা হয়। এসময় কলাপিঠা খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন লাভলু, তার মা আনোয়ারা বেগম ও বোন রুবাইয়া ইয়াসমীন হ্যাপি।

রাত ১২টার দিকে লাভলুর বড়ভাই নূরে আলম সিদ্দিকী বাবলু বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ভেতরের জিনিসপত্র এলোমেলো। নেই জমি কেনার জন্য রাখা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার।

বিষয়টি জানিয়ে পরিবারের আরেক সদস্য মেহেদী হাসান রাজা বলেন, পুলিশ এলেও কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা শনাক্ত করতে পারেনি। পরপর দুই দিনে একই উপজেলার তিন বাড়িতে চেনতানাশক মিশিয়ে দুর্বৃত্তদের চুরির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, খাবার খাওয়ার পরই পরিবারের সদস্যরা চেতনা হারিয়ে ফেলেন। এই সুযোগে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *