ঈশ্বরগঞ্জে `ভিক্ষা দেবার মানুষও নাই’

ঈশ্বরগঞ্জে `ভিক্ষা দেবার মানুষও নাই’

ঈশ্বরগঞ্জ (সমকাল) প্রতিনিধিঃ সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা’ হারিয়েছেন সুরুজ মিয়া। সেইসঙ্গে কাঁধের একটি হাড়ও ভেঙে গেছে। আগে রিকশা চালিয়ে সংসারের বোঝা টানলেও পা’ হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামেন তিনি।

কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও সকল শ্রেণির মানুষ নিজ ঘরে অবস্থান করছে। বন্ধ রয়েছে বাজার, দোকানপাট, গণপরিবহনও। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বাজারে মানুষের দেখা নেই বললেই চলে। এতে খাবারের সংকটে ভুগছে সুরুজ মিয়া ও তার পরিবার। দিশেহারা সুরুজ মিয়া স্ট্রেচারে ভর করে দিক-বিদিক ছুটলেও কোথাও মানুষের দেখা নেই।

সুরুজ মিয়ার সঙ্গে প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হয় ঈশ্বরগঞ্জ চৌরাস্তা মোড় এলাকায়। পুলিশের টহলের মধ্যে অনেকটা ভয়ে ভয়ে বাজারে এসেছেন তিনি। কিন্তু বাজারে এসে দেখেন মানুষ শূন্য। কোথাও কেউ নেই। ছলছল চোখে স্ট্রেচারে ভর করে ঘুরছেন পৌর শহরের সড়ক জুড়ে। কিন্তু তাকে ভিক্ষা দেবার মতোও মানুষ নেই কোথাও।

উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে সুরুজ মিয়া (৫০)। দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা তিনি। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ভিক্ষার টাকায় তার ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।

সুরুজ মিয়া জানান, আগে তিনি ভিক্ষা করে তিন-চারশো টাকা পেতেন প্রতিদিন। কিন্তু ভয়ে কয়েকদিন ঘরে বসে ছিলেন। এখন ঘরে খাবার নেই। তাই দুদিন ধরে বাজারে আসছেন। মানুষের কাছ হাত পেতে স্ত্রী সন্তানের জন্য খাবারের জোগান দেবেন বলে। কিন্তু কে দেবে ভিক্ষা। কেউ তো নেই। এখন সারাদিন ঘুরলে চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকার ওপরে পাননা।

তিনি বলেন, ‘করোনায় মৃত্যু না হলেও অভাবে না খেয়ে মরতে হবে আমাদের মতো গরিব মানুষের।ভিক্ষা দেবার মানুষও নাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *