ভিজিডির অনিয়মে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ভিজিডির অনিয়মে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট বা দুস্থ মহিলা উন্নয়ন ভিজিডির অনিয়মে ১শ ২৬ কার্ডধারী ২১ মাসের চাল পায়নি। যা তদন্ত কমিটি প্রমাণ পেয়েছে।

জানা যায়, রাজিবপুর ইউনিয়নের সুবিধা বঞ্চিত কার্ডধারীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১৪ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সানোয়ার রাসেলকে আহবায়ক, উপ সহকারী প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য আবুল কায়সার তালুকদার ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ্জহুরাকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেন।

গত ২০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত শুরু করেন। প্রথম দিনেই ১২৪ জনের মধ্যে ২৮ জন, ২য় দিন ২৩ নভেম্বর ১১০ জনের মধ্যে ২০ জন, পরবর্তীতে ইউপি সচিব ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ২৬ নভেম্বর ৯ জনের মধ্যে ৭ জন, ২৯ নভেম্বর ২৫ জনের মধ্যে ২৪ জন, মোট ৭৯ জন সুবিধাভোগী ২১ মাসের চাল পায়নি।

দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর আরও ৪৭ জন কার্ডধারীর কোন হদিস খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। ভিজিডি পরিপত্রে সুবিধাভোগীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও নীতিমালা উপেক্ষা করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে একসাথে তিন মাসের চাল বিতরণের অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের।

জানা যায়, সরকারী ভাবে প্রতি টন চালের মূল্য ৪৬ হাজার ৫শত ৩৯ টাকা। এতে ২১ মাসের ১শত ২৬ কার্ড ধারী ৭৯ টন ৩৮০ কেজি চাল পাওয়ার কথা যার মূল্য ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ২৬৫টাকা।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১৫ জনের মহিলা নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ইউএনও এবং সদস্য সচিব মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার স্বাক্ষরে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি হারে চাল পাওয়ার কথা থাকলেও গত ২১ মাসে ১২৬ জনকার্ডধারী কোন চাল পায়নি।

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মায়া রাণী সরকার জানান, এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। গরীবের নামে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ এর প্রমাণ মিললে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়ার দরকার ।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক, সানোয়ার রাসেল জানান, উপজেলা ভিজিডি (ভিডব্লিউবি)’র সভাপতি উপজেলা নির্বাহী আফিসারের কাছে ৭ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন সাবেক চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলামও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ফকির ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার হাফিজা জেসমিন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি ওই ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *