ঈশ্বরগঞ্জে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়

ঈশ্বরগঞ্জে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষকের মতবিরোধ ও কমিটি নিয়ে মাতানৈক্য থাকায় শিক্ষার্থী শূণ্য হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলে যেতে নিষেধ করায় গত দু’দিন ধরে শিক্ষার্থী খরায় ভুগছে বিদ্যালয়টি।

১০৪ বছরের পুরুনো মগটুলা ইউনিয়নের দুবলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০১৮ সালের মে মাসে যোগদান করেন আবু রায়হান সেখ। বিদ্যালয়টিতে দশ বছর ধরে কর্মরত সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান নয়ন ও উমর ফারুখ সম্প্রতি বিদ্যালয় থেকে বদলির আবেদন করেন শিক্ষা বিভাগের কাছে।

প্রধান শিক্ষকের সাথে মাতানৈক্য হওয়ায় বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষক বদলী হয়ে চলে যাবে এমন খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া গত সাতমাস পূর্বে বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে বিদ্যুৎসাহী হিসেবে জসিম উদ্দিন ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম প্রার্থী হন।

পরবর্তীতে আবদুস সালামকে সভাপতি হন। কিন্তু জসিম উদ্দিন সভাপতি না হতে পারলেও তার স্ত্রী কল্পনা আক্তরকে মহিলা বিদ্যুৎসাহী করা হয়। তাই কমিটি গঠন নিয়েও স্থানীয় এলাকাবাসীর একটি অংশের অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষক বদলী হয়ে যাবেন এই খবরে বুধবার সকালে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে নিষেধ করেন আনিসুর রহমান নামের এক অভিভাবক।

বিদ্যালয়ের ভালো শিক্ষক যেনো না যায়, বিষয়টি নিয়ে বিরোধ সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের আসতে মানা করে আসা হয়। ওই অবস্থায় বুধবার বিদ্যালয় প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য ছিল। বৃহস্পতিবারও বিদ্যালয়টি প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য ছিল। খবর পেয়ে বেলা ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ে গেলে মাত্র ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিতি পাওয়া যায়। যদিও বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী ২৫৮ জন।

আনিসুর রহমানের দাবি, প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ের ভালো শিক্ষকরা চলে যাচ্ছে। এতে পড়ালেখার মান নষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষকরা যেনো না যেতে পারে, সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের আসতে নিষেধ করেন তিনি।

সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান নয়ন ও উমর ফারুখ বলেন, প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর তাদের বিদ্যালয় থেকে অবমূল্যায়নের শিকার হয়ে একজন শিক্ষক বদলী হয়ে চলে যান। তারাও অবমূল্যায়িত হচ্ছেন। তাই বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাবার জন্য আবেদন করেছেন।’ জসিম উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’

প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান সেখ বলেন, তার বিদ্যালয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা সৃষ্টি করা হয়েছে। জসিম উদ্দিন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলে আসতে নিষেধ করেন।’ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবদুস সালাম বলেন, স্লিপ বরাদ্দের টাকার হিসেব চাইছিল জসিম। তার কাছে হিসেব না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের প্রতিষ্ঠানের ওপর ফেলা সমীচিন নয়। এ বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *