ছেলেকে ডিসি ইউএনও’র লোক পরিচয়ে স্থানীয়দের হুমকি দেন পিতা

ছেলেকে ডিসি ইউএনও’র লোক পরিচয়ে স্থানীয়দের হুমকি দেন পিতা

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ছেলে জেনিফ আহমেদকে ডিসি ইউএনও’র লোক পরিচয়ে স্থানীয়দের হুমকি দেন এক স্কুল শিক্ষক পিতা। তোরা কেউ কিছু করতে পারবে না যেখানেই অভিযোগ দিবে কোন কাজেই আসবে না। কারণ আমার ছেলে ডিসি ইউএনও’র লোক তাই তোরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কিছুই করতে পারবে না। বরং আমি তোদের কে এলাকা ছাড়া করে দিতে পারবো। এভাবেই ডিসি ও ইউএন’র কথা বলে প্রতিনিয়ত স্থানীয়দের হুমকী দিয়ে আসছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের খালবলা বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও খালবলা বাজারের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন যাবৎ যে কোন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রতিবেশির উপর চড়াও হয়ে যায়। কেউ তার এমন আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকী ধমকী দেন তাদের। নিজের ছেলেকে ডিসি ইউএনও’র লোক পরিচয় দিয়ে ওই হুমকী দেন। এলাবাসী জানায় নূর মোহাম্মদের একমাত্র ছেলে বোরহান উদ্দিন রব্বানী ওরফে জেনিফ কখনও সেচ্ছাসেবী বা বিভিন্ন অযুহাতে ইউএনও ও ডিসি’র সাথে ফটো তুলে।

পরে ওই ফটো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে নিজেকে তাদের লোক বলে প্রচার করে এলাকাবাসীকে নানা হুমকী ধমকী দেয়। এরই মাঝে প্রতিবেশী বজলুর রহমানের বাড়ি ঘিরে টিনের বেড়া দিয়ে পথ আটকিয়ে দেয়। পিতা-পুত্রের এমন কাণ্ডের প্রতিবাদ করলে বজলুর রহমানকে মারতে তেড়ে যায়। এসময় বাবা-ছেলে মিলে ডিসি ও ইউএনও’র লোক পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের হুমকিও দেন বলে জানান বজলুর রহমান।

অপর দিকে শিক্ষক নূর মোহাম্মদের বাসা থেকে পয়ঃনিষ্কাশনের পানি বাজারের রাস্তায় আসার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় চা’য়ের দোকানী মনির হোসেনকে মারধর করতে যায়। ওই বিষয়টি নিয়ে মনির হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর সেই মনিরকে দোকান থেকে উচ্ছেদ ও তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মেরে ফেলার অব্যাহত হুমকী দিয়ে যায়। এঅবস্থায় নিরাপত্তহীনতায় ভোগছে বলে জানান মনিরের পরিবার।

বিষয়টি নিয়ে খালবলা বাজারের বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, নূর মোহাম্মদ নিজের ছেলেকে ডিসি ইউএনও’র লোক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এমন হুমকী ধমকী দেওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

স্কুল কমিটির সভাপতি ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীসহ প্রতিবেশিরা অতিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে যেকোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাদের কর্মকান্ডে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। অনেক শালিস দরবারে পরেও তারা নিয়ন্ত্রণহীন।

আঠারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুবের আলম কবীর রূপক বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অসংখ্য অভিযোগের পর তাদের ডেকে সাবধান করা হয়েছে। তারপরও তারা তাদের কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা: হাফিজা জেসমিন বলেন, ইউএনও’র পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপ্রিতিকর কর্মান্ডের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আঠারবাড়ির তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে বিষয়টি দেখার জন্যে নির্দেশ দিয়েছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *