আশরাফ আলী খান

আশরাফ আলী খান (বীর প্রতীক)

আশরাফ আলী খান (১৯৫৭ – ৩০ জুন, ২০২০) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন


আশরাফ আলী খানের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগি ইউনিয়নের চট্টিগ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল মমিন খান মোজাহেদী এবং মায়ের নাম মরিয়ম খাতুন। তার স্ত্রীর নাম জীবুন্নাহার। এ দম্পতির তিন ছেলে।

আশরাফ আলী খান (বীর প্রতীক)
জন্ম

১৯৫৭ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা, ময়মনসিংহ

মৃত্যু

৩০ জুন, ২০২০ ময়মনসিংহ জেলা

জাতীয়তা বাংলাদেশী
নাগরিকত্ব  পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ (১৯৭১-২০২০)
পরিচিতির কারণ বীর প্রতীক

কর্মজীবন


প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন আশরাফ আলী খান। ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ যশোর সেনানিবাসে আক্রান্ত হন। এরপর তারা সেখান থেকে বেরিয়ে চৌগাছায় মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি সিলেটের গৌরীপুর ছাড়াও কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার কোদালকাটি, কামালপুর যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা


১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট এলাকা। অদূরে সুরমা নদী এবং তার দক্ষিণ তীরে গৌরীপুর। সেখানে অবস্থান নিল মুক্তিবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী দল। এই দলে আছেন মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান। এ দলে তিনি হেভি মেশিনগান চালক।

কানাইঘাটে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের আলফা কোম্পানি। তারা হঠাৎ তাদের ডিফেন্স পজিশন ছেড়ে গৌরীপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করল। অতর্কিত এই আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর অবস্থান বেশ নাজুক হয়ে পড়ল। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে পাকিস্তানিদের আক্রমণ প্রতিহত করে যাচ্ছেন। চারদিকে গোলাগুলির তীব্র শব্দ। আর্তনাদ আর চিৎকার। আশরাফ আলী খান বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন।

মাঝে মধ্যে দেখছেন সহযোদ্ধাদের শহীদ ও আহত হওয়ার দৃশ্য। ক্রমে মুক্তিবাহিনীর হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে তাদের আলফা কোম্পানির কমান্ডার ক্যাপ্টেন মাহবুব শহীদ হলেন। ক্যাপ্টেন মাহবুব শহীদ হলে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন লেফটেন্যান্ট লিয়াকত। তিনিও শত্রুর গুলিতে আহত হন। আশরাফ আলী নিজেও শত্রুর গুলিতে গুরুতরভাবে আহত হলেন। তার বুকে দুটি গুলি লাগে। সেদিন গৌরীপুরে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে দৃঢ়তার সঙ্গে পাকিস্তানিদের আক্রমণ শেষ পর্যন্ত প্রতিহত করেন। মুক্তিযোদ্ধারা গতানুগতিক সম্মুখযুদ্ধেও যে দক্ষ, তা সেদিন তারা স্বীয় শৌর্যবীর্য ও ত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণ করেন। তাদের সাহস, মনোবল, বীরত্ব ও রণনৈপুণ্যের কাছে পাকিস্তানিরা হার মানতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানিরা গৌরীপুর থেকে পালিয়ে আবার তাদের কানাইঘাট ডিফেন্সে অবস্থান নেয়।

 

One thought on “আশরাফ আলী খান (বীর প্রতীক)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *