ঈশ্বরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর সাথে অধ্যক্ষের ছবি

প্রভাব বিস্তার: ঈশ্বরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর সাথে অধ্যক্ষের ছবি!

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঈশ্বরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে অধ্যক্ষের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঈশ্বরগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল আলমের সাথে গণভবনের ডায়াসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপচারিতার ছবিটি প্রতিষ্ঠানের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে গত ২৮ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৫:৩৯ মিনিটে পোস্ট করেন অধ্যক্ষ। ছবির নিচে তিনি লেখেন “অবশেষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ”।

প্রতিষ্ঠানের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ছবিটি পোস্ট করা হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মঙ্গলবার (৩১অক্টোবর) এক শিক্ষকের আইডি থেকে ছবিটি ভাইরাল হলে অলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। পরে অধ্যক্ষের নির্দেশে ওই শিক্ষক ছবিটি ডিলিট করেন।

ধারণা করা হচ্ছে, ২৩.১১.২০১৯ সালে ওই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করা অধ্যক্ষ কামরুল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারি ও নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক হিসেবে জাহির করাসহ সামাজিকভাবে প্রভাব বিস্তারের আশায় এ ছবিটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ছবিটি প্রতিষ্ঠানের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করা হলে শিক্ষকদের মাঝেও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ছবির ব্যাপারে অধ্যক্ষ প্রথমে শিক্ষকদের বলেন, তিনি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া-কটিয়াদি আসন থেকে মনোনয়নের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে অধ্যক্ষের ছবির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য আবুল কাশেম জানান, বিষয়টি কয়েকজন শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। এতে বুঝা যায় অধ্যক্ষ আধিপত্য বিস্তার করার উদ্যেশেই স্কুলের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অধ্যক্ষ যদি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন, তাহলে বিষয়টি ঈশ্বরগঞ্জের জন্য গর্বের। অপরদিকে ছবিটি সঠিক না হলে বিষয়টি হবে পরিতাপের।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাফির উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে অধ্যক্ষের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ও পরে ডিলেট করার ফলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল আলম বলেন, ভাইরাল হওয়া ছবিটি সামরিক জাদুঘরে রক্ষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতির সাথে আমি ছবি তুলেছি। সেখানে শত শত মানুষ ছবি তুলছে, এটা দোষের কিছু নয়। ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করা ছবি নিয়ে শিক্ষকরা ফান করেছে মাত্র। দায়িত্বশীল পদে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে ফান করা যায় কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ‘তিনি দোষের কিছু দেখছেন না বলে জানান’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ভাইরাল হওয়ায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বন্ধে আপনি কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার আইডি থেকে একটি পোস্ট দেব” বলে জানান তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবির বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ না করে এধরনের ছবি কোথাও পোস্ট করা নেহায়ের অন্যায়।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিন জানান, দেশে বিদেশে বিভিন্ন মিউজিয়ামে বিখ্যাত ব্যাক্তিদের এমন ছবি সংরক্ষিত আছে। যেখানে অনেকেই ছবি তুলেন। তবে এসমস্ত ছবি প্রচার, প্রকাশ ও ব্যাবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এধরনের ছবি সোশ্যাল সাইটে প্রকাশের ক্ষেত্রে ক্যাপশনে লিখে দেওয়াই উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *