ঈশ্বরগঞ্জে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ঈশ্বরগঞ্জে ডিভোর্স দেওয়ায় সাবেক স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা। নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে দুই বছরের সন্তান রেখেই স্বামীকে একতরফা তালাক দেয় স্ত্রী। এরপর দেখা নেই পাঁচ মাস। আজ মঙ্গলবার সকালে পোশাক শ্রমিক ওই নারী বাড়িতে এসে নিজের সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করছে- এমন দৃশ্য দেখেই ক্ষিপ্ত হন (চাচাতো ভাই) তালাকপ্রাপ্ত স্বামী।

আর তখনি হিংম্রতা দেখিয়ে ধারালো ছুরি নিয়ে উপর্যুপরি আঘাতে ঘটনাস্থলেই স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম লাকী আক্তার (২২)। তিনি একই গ্রামের আবু সাঈদের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্র, নিহতের পরিবারের লোকজন ও পুলিশ জানায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ আলীর ছেলে মো. এমদাদুল হক গত চার বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন চাচাতো বোন লাকী আক্তারকে। এমদাদুল পেশায় একজন কৃষক। তাদের ঘরে মাইসা আক্তার নামে দুই বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

গত পাঁচ মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে নানা টানাপড়েন দেখা দেয়। এর জের ধরে লাকী আক্তার একতরফা ভাবে স্বামীকে তালাক দিয়ে ঢাকায় চলে যান। এদিকে শত চেষ্টা করেও স্ত্রীকে তালাক দেওয়া থেকে বিরত করতে পারেননি স্বামী এমদাদুল। লাকী ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন। অন্যদিকে একমাত্র সন্তান মাইসাকে নিয়ে সময় কাটে এমদাদুলের।লাকী আক্তার

মঙ্গলবার এমদাদুল জমিতে ধান কাটছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাবেক স্ত্রী লাকী আক্তারের আগমনের সংবাদ পেয়ে দ্রুত বাড়ি ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখাতে পান সন্তান মাইসাকে নিয়ে চাচার ঘরে শুয়ে আদর করছে লাকী আক্তার। সাবেক স্ত্রী কর্তৃক সন্তানকে আদর করার এ দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেননি এমদাদ। ক্ষুব্ধ হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে স্ত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। উপর্যুপরি আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ঘরে ফেলে পালিয়ে যান। চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন এসে লাকীকে পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

লাকির ভাবি শিপা বেগম জানান, তার ননদ মেয়েকে খাবার খাওয়ানোর সময় এমদাদ ছুরি নিয়ে দৌড়ে আসে। ওই সময় তিনি ও তার চাচী আলেয়া খাতুন তাকে ফেরাতে গিয়ে রক্তাক্ত হন। এরপর সে লাকির বুকে ছুরি বসিয়ে দেয়। 

ময়মনসিংহের গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলেও বেশ কয়েকবার স্ত্রীকে অনুনয়-বিনয় করেন এমদাদাদ। এ অবস্থায় তালাকের মতো সিদ্ধান্ত নেয় লাকী। এ অবস্থায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে একটা জেদ পুষে রাখে। সেই জেদেই স্ত্রীকে কাছে পেয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় এমদাদুলের বাবা ও মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *