‘শান্তি কমিটি’র তালিকা নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ

‘শান্তি কমিটি’র তালিকা নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ঈশ্বরগঞ্জে স্বাধীনতাবিরোধী শান্তি কমিটির তালিকা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তালিকা প্রণয়নকারী তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। এ তালিকার পক্ষে–বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শান্তি কমিটির তালিকায় ২৪ জনের নাম আছে। তালিকার ২ নম্বরে রয়েছেন ঈশ্বরগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমানের বাবা মৃত আব্বাছ আলীর নাম। ৪ নম্বরে আছে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামের বাবা জাবেদ আলী ব্যাপারীর নাম।

২০১৭ সালে প্রণীত এ তালিকায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তিন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষর আছে। তাঁরা হলেন তৎকালীন সহকারী কমান্ডার মো. নুরুল হক, সহকারী কমান্ডার মো. আবদুল হাই ও সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান আকন্দ।

তালিকার বিষয়ে সাবেক কমান্ডার মো. হাবিবুর রহমান আকন্দ মুঠোফোনে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম সংগ্রহ করেছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের সহায়তা করেছেন। ঈশ্বরগঞ্জের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার স্মারক নম্বরসহ চিঠি ও চাহিদার কথা উল্লেখ করে তালিকা প্রণয়ন করতে তাঁকে চিঠি দিয়েছিলেন।

কয়েক দিন আগে শান্তি কমিটির এ তালিকা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসে। এরপর তালিকা প্রণয়নকারী তিন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে গত বুধবার আদালতে মানহানির মামলা করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম।

রফিকুল ইসলাম গত শুক্রবার মুঠোফোনে বলেন, তাঁর বাবা জাবেদ আলী ব্যাপারী ‘স্বাধীনতার পক্ষের লোক’ ছিলেন। তিনি তা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলতে পারবেন। ২৯ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি সেই সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী। তাঁর বিরোধীরা শান্তি কমিটির তালিকাটি সামনে এনে তাঁকে ঘায়েল করতে চাইছে।

হাবিবুর রহমান আকন্দ আরও বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। তবু জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই তালিকাটি সঠিক কি না, তা আপনিও (সাংবাদিক) যাচাই করে দেখতে পারেন।’

তালিকায় স্বাক্ষরকারী আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ তালিকা প্রণয়ন করেছেন। এই কাজের জন্য মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তিনিও যুক্ত ছিলেন।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *