ঈশ্বরগঞ্জে হেলে পড়া ভবনের পাশে বাস

ঈশ্বরগঞ্জে হেলে পড়া ভবনের পাশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ রাজীব তাঁর পরিবারের ঝুঁকির বিষয়টি লিখিতভাবে জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার খালবলা বাজারের এক পরিবারের চার বাসিন্দা কয়েক বছর ধরে একটি হেলে পড়া বিশাল পাটগুদাম ভবনের পাশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।

ওই পরিবারের বাসিন্দা রাজীব কুমার বণিক (৩৬) ঝুঁকির বিষয়টি লিখিতভাবে জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

রাজীব বণিক বলেন, ‘দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কারও সহায়তা পাচ্ছি না। আমি ২০১৪ সাল থেকে কয়েকবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। এরপরও কোনো কাজ হয়নি। হেলে পড়া গুদাম ভবনের চাপায় আমি বা আমার পরিবারের সব সদস্যের সমাধি হওয়ার খবর পেলে হয়তো কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে। আমি কি সেই অপেক্ষায় থাকব?’

সরেজমিনে দেখা যায়, খালবলা বাজারটি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত। একসময় এ বাজারে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) পাট ক্রয়কেন্দ্র ছিল। দেশের বিভিন্ন পাটকলের ক্রয় প্রতিনিধিরা খালবলা বাজারে বসে হাজার হাজার মণ পাট কিনতেন। ক্রয় করা বিপুল পরিমাণ পাট মজুত রাখার জন্য খালবলা বাজারে বেশ কিছু বড় গুদাম গড়ে ওঠে। তেমন একটি গুদামের মালিক হচ্ছেন একই উপজেলার রায়ের বাজারের বিশিষ্ট ধান-চাল ব্যবসায়ী মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে মঞ্জু মিয়া (৭০)। ৮-১০ বছর আগে পাট ক্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ হলে এসব গুদাম খালি পড়ে থাকে। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় আমিনুলের গুদামটি হেলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ী মো. আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন গুদামের পাশে নিজের জমিতে বসবাস করেন খালবলা বাজারের বাসিন্দা রাজীব কুমার বণিক, তাঁর বিধবা বোন স্বপ্না রানী বণিক (২৬), আরেক ছোট বোন সৃষ্টি রানী বণিক ও তাঁর (সৃষ্টি) শিশুকন্যা জনি রানী বণিক (৬)।

পরিবারের কর্তা রাজীব বলেন, তিনি প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে সম্মানসহ মাস্টার্স পাস করে চাকরি খুঁজছিলেন। কিন্তু কোনো চাকরি পাননি। এদিকে সরকারি চাকরির বয়স চলে গেছে। এখন তিনি একটি হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারী। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্যমতে, তিনি ফুটফরমায়েশের কাজ করেন।

রাজীব বলেন, আট বছর আগে ভবনটি হেলে পড়ে। তিনি গুদাম মালিককে হেলে পড়ার ঘটনা বারবার জানিয়েও সাড়া পাননি। তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা উপেক্ষিত হওয়ায় তিনি বিষয়টি পর্যায়ক্রমে রায়ের বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক, উপজেলা প্রশাসন, এমনকি ঈশ্বরগঞ্জ আসনের সাংসদ ফখরুল ইমামকে পর্যন্ত জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর আবেদনে কেউ সাড়া দেননি।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *