ঈশ্বরগঞ্জে জাপা নেতা লাঞ্ছিত

রাজাকারের তালিকায় নাম থাকায় ঈশ্বরগঞ্জে জাপা নেতা লাঞ্ছিত

ডেস্ক নিউজ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রণীত রাজাকারের তালিকায় নাম থাকার অভিযোগে উপজেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম খান সুরুজ লাঞ্ছিত হয়েছেন। সোমবার উপজেলা পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গতকাল ছিল উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার নির্ধারিত দিন। সভায় ময়মনসিংহ -৮ ঈশ্বরগঞ্জ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করতে আসেন নুরুল ইসলাম খান সুরুজ। সভা চলাকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান রাজাকারের তালিকায় নাম থাকা ব্যাক্তিকে নিয়ে সভা না করতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

এসময় সভায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হলে নুরুল ইসলাম খান সুরুজ সভাস্থল থেকে বের হয়ে উপজেলা গেটের কাছে আসলে ‘ বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’ বলে কতিপয় যুবক শ্লোগান দেয়। পরে বাসায় যাওয়ার জন্য রিকশায় উঠলে শ্লোগান দাতারা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম খান সুরুজ জানান, ভুলবশত রাজাকারের তালিকায় আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে তালিকা প্রণয়নকারীদের জানালে তারা আামার নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত তালিকা পুনরায় তৎকালীন ইউএনও বরাবর জমা দেন। আমি ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করেছি। চাকরি জীবনে আমি আওয়ামী লীগ সমর্থিত ট্রেড ইউনিয়ন করেছি। যুবলীগের কতিপয় উত্তেজিত কর্মীরা আমাকে লাঞ্ছিত করে আমার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ।

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম ভূঞা সুমন নুরুল ইসলাম খান সুরুজের বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন, যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিত করার আনীত অভিযোগ সত্য নয়। উপরন্তু আমি তাকে উত্তেজিত যুবকদের কবল থেকে রক্ষা করে নিরাপদে বাসায় যেতে সহায়তা করেছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান জানান, আমার জানা মতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে ২০১৭ সালে প্রেরিত রাজাকারের তালিকা দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে ২০২০ সালে চূড়ান্ত করে। সেই তালিকায় নুরুল ইসলাম খান সুরুজের নাম রয়েছে। আমি শহীদ পরিবারের সন্তান ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে সভাটি রাজাকার ব্যতিরেকে করার প্রস্তাব করেছিলাম।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমি জানি নুরুল ইসলাম খান সুরুজ ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করত। এখন কীভাবে তার নাম রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলো বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি মনে করি এটা এক ধরণের রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমীন বলেন, সভা শুরু হলে বিষয়টি উত্থাপিত হলে নুরুল ইসলাম খান সুরুজ সভাস্থল ত্যাগ করেন ।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় তিনি সদস্য নন । রাজাকারের তারিকায় নাম থাকার বিষয়টি গত সপ্তাহে তিনি নিজেই আমাকে অবহিত করেন। এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম খান সুরুজ সভায় কিছুু বলতে চাইলে পরিবেশ শান্ত রাখার স্বার্থে তাকে বক্তব্য না রাখতে বলা হয় তারপর তিনি সভাস্থল ত্যাগ করেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *